কৌশলী পাঠ গ্রহণের মাধ্যমে পাঠগ্রহণের প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করা সম্ভব। কিছু কৌশল অবলম্বন করে যেমন নিজের “স্ট্রং জোন” এবং “উইকজোন” শনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী লেসন প্লান ঠিক করার মাধ্যমে দুর্বলতা গুলো কাটিয়ে ওঠা ও শক্তিমত্তার দিকটি আরো মজবুত করতে নিজের পাঠ গ্রহণের ও পড়াশোনার কৌশল গ্রহণ করা খুবই জরুরী।
একজন ছাত্র যখন তার পাঠগ্রহণের মাধ্যম যথাযথ ভাবে অবলোকন করতে পারবে এবং সে অনুযায়ী কৌশল গ্রহণ করবে, তখন ক্লাসে ভাল করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রফেসর বা শিক্ষক এর পাঠদান প্রক্রিয়ার সাথে সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। এ কারণে শিক্ষক এর পাঠদান কৌশল না বুঝতে যেয়ে নিজের পাঠগ্রহণের কৌশল বুঝতে পারাটাই অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
⟴ বুদ্ধিমত্তার প্রকারভেদঃ
⧭ মৌখিক ও ভাষাগতঃ ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রহণ ও অন্তঃস্থকরণ ।
⧭ যৌক্তিক ও ম্যাথমেথিকালঃ ম্যাথমেটিকাল টার্ম এর ক্ষেত্রে লজিক প্রয়োগ ও বিভিন্ন অপশন যাচাই করে, সমস্যা পর্যালোচনা করে সমাধানে আসতে হবে।
⧭ সংগীত ও সুরঃ সংগীত ও সুর এর সাথে জ্ঞান বা পড়াশোনার সম্পর্ক আবিষ্কার মনোবিজ্ঞানীদের এক অন্যতম আবিষ্কার। বিভিন্ন টপিক ভিন্ন ভিন্ন রিদম ও মিউজিক প্যাটার্ণ ব্যবহার করা যায়। স্টাডি টিউন পড়াশোনার সময়ে মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক।
⧭ বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়ঃ বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়াবলী আয়ত্ত্ব করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন লেসন শনাক্ত করা, বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে ভাগ করা, নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু অংকন এর মাধ্যমে সহজে অন্তঃস্থ হয়।
⧭ নিজের অভ্যন্তরীণ বা আন্তঃব্যক্তিগতঃ ইনটেনশন, মোটীভেশন ও চাওয়া অনুধাবন করে কার্যকরীভাবে পাঠ সহজেই অন্তঃস্থ করা সম্ভব।
⟴ পাঠগ্রহণের চিরায়ত ও প্রথাগত কৌশলঃ
ভিজুয়াল লার্নাররা সচরাচর তথ্যের একটি চিত্র, পরিষ্কার চিত্র ধারণ করে থাকে তা অন্তঃস্থ করার জন্য। এ ধরণের শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠের বিষয়বস্তু বিচিত্রতার সাথে গ্রহণ করে থাকে। এদের উপস্থাপনা হয় রঙ্গিন যার ফলে এভাবে পাঠগ্রহণ সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ও দীর্ঘস্থায়ী হয়।
- অডিটরী লার্নাররা সাধারণত শ্রবণ এর উপর অধিক গুরুত্ব দেয়। এরা এদের পাঠদানের বিষয়গুলো বারবার শোনে ও তার পাশাপাশি পড়ে এবং এভাবে পাঠ অন্তঃস্থ করে থাকে। অডিটরী লার্নাররা তাদের পাঠ পড়া ও শোনার মাধ্যমে সর্বাধিক
কার্যকর ভাবে আয়ত্ত্ব করে।
ট্যাকটাইল বা কাইনেসথেটিক লার্নাররা ফিজিক্যাল এক্টিভিটির মাধ্যমে পাঠ গ্রহণ করে থাকে। এদের পাঠ গ্রহণের প্রক্রিয়া হয় প্রাকটিক্যাল। এই শ্রেনীর লার্নার বা শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণের সময় বিভিন্ন ধরণের গেশ্চার বা অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে থাকে। অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে এ ধরণের শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠগ্রহণ সম্পন্ন করে থাকে।
⟴ নিজের পাঠ গ্রহণের উপায় সম্পর্কে জানো এবং নিজের সুবিধায় তা ব্যবহার করোঃ
তুমি কোন ক্যাটাগরীর লার্নারদের মধ্যে পড়? নিজেকে এ প্রশ্ন করতে হবে এবং ৩ উপায়েই পাঠ গ্রহণ করতে হবে। কোন উপায়ে পাঠগ্রহণ করে তুমি সহজে অন্তঃস্থ করতে পারো তা নির্ধারণ করতে হবে। অন্যদের থেকে তোমার দক্ষতা, শক্তিমত্তা এবং দুর্বলতার দিকগুলো ভিন্ন। তাই, নিজের সক্ষমতা ও ক্যালিবার যাচাই করে নিজের জন্য পাঠ গ্রহণের একটি কৌশল গ্রহণ করতে হবে।
যদি তুমি ভিজুয়াল লার্নিং এর মাধ্যমে সহজে পাঠ গ্রহণ করতে পার তবে পাঠগ্রহণের ক্ষেত্রে পূর্বে আলোচিত ভিজুয়াল লার্নিং এর কৌশলগুলো অবলম্বন করা শ্রেয়। যদি অডিটরী লার্নিং এর মাধ্যমে সহজে পাঠ গ্রহণ করা যায়, তবে অডিটরী লার্নিং এর জন্য যে পদক্ষেপগুলো আলোচনা করা হয়েছে তা গ্রহণ করা যেতে পারে।
ট্যাকটাইল লার্নিং এ যদি পাঠ গ্রহণ অধিকতর সহজ হয় তবে ট্যাকটাইল লার্নিং এর পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে হবে। সর্বোপরি নিজের জন্য উপযোগী ও কার্যকর পাঠগ্রহণ কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
আমাদের দক্ষতা, শক্তিমত্তা ও দুর্বলতার দিকগুলো ভিন্ন, তাই আমাদের প্রত্যেকের পাঠ গ্রহণের পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া এক নয়। সুতরাং, অন্যের পাঠ গ্রহণের ধরণ অনুসরণ না করে নিজের জন্য সর্বোত্তম কৌশল গ্রহণ করা শ্রেয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, কেবল নিজের জন্য কার্যকরী পাঠ গ্রহণের পদক্ষেপ ও কৌশল কেবল অনুধাবন করলেই চলবে না, তা বাস্তবায়নও করতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ
Nice article