পলান সরকার। বয়স ৯৫বছর। প্রতিদিন সকালে ঝোলাভরা বই কাঁধে গ্রামের পথে হাঁটতে শুরু করেন পলান সরকার। উদ্দেশ্য—মানুষকে বই পড়ানো। একদিন-দুদিন নয়, গত ৩০ বছর ধরে এভাবেই প্রতিদিন পায়ে হেঁটে রাজশাহীর প্রায় ২০টি গ্রাম জুড়ে বই পড়ার এক অভিনব আন্দোলনের জন্ম দিয়েছেন তিনি।
এই বই পড়ানো তার কোনো পেশা নয়।এটি তার সখ। তিনি চান সবাই বই পড়ুক। তিনি হয়তো অগাধ সম্পত্তির মালিক নন, কিন্তু তিনি একটি বড় মনের মানুষ। তাঁর মনে মানুষের জন্য জীবন বিলিয়ে দেয়ার যে শপথ তা সবার নেই। এ ধরণের সাহস সবার থাকে না। মনের শক্তি না থাকলে এধরণের কাজ কেউ করে না। একেই বলে মনের প্রাচুর্যতা। মনের প্রাচুর্যতার জন্য অগাধ সম্পত্তির মালিক হতে হয় না।
কিন্তুআমরাকিভাবে আমাদের মনের সংকীর্ণতা দূর করে এধরণের প্রাচুর্যতায় নিজের মনকে ভরিয়ে তুলতে পারি? নিজের ইচ্ছাই হচ্ছে সবকিছুর মূল। ইচ্ছাই আমাদের মনকে ভরিয়ে তুলতে পারে এ ধরণের প্রাচুর্যতায়।
১।শুধু নিজের কথা ভাবা বন্ধ করুন
যে শুধু সারাক্ষণ নিজের কথাই ভাবে সে কখনো মনে শান্তি পায় না। কারণ নিজের একটি স্বপ্ন পূরণ করলেই আরেকটি স্বপ্ন এসে দরজায় কড়া নড়ে। সুতরাং শান্তি আর আসে না। কিন্তু মানুষ যখন অন্যের জন্য কিছু করতে চায়, তখন নিজেকে সৃষ্টিকর্তার বান্দা হিসেবে মনে হয়। তখন নিজের কোনো চাহিদা থাকে না। সবকিছুই করতে হয় অপরের জন্য। অপরের জন্য যত বেশি কিছু করবেন, ততই আপনার মনে সুখ নেমে আসবে।
২। নিজের সাফল্যের পিছনে যার কৃতিত্ব আছে তাকে ধন্যবাদ দিতে শিখুন
মানুষ একা কখনই পথ চলতে পারে না। সেভাবে মানুষ নিজে নিজেই কোনো কঠিন পথ একা অতিক্রম করতে পারে না। তার সাফল্যের পথে কেউ না কেউ থাকে। তাই যিনি আপনার এই সাফল্যের পথে সামান্য হলেও সহায়তা করেছেন, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। দেখবেন, কৃতজ্ঞতাবোধ এর পর নিজেকে বেশ সুখি মনে হচ্ছে।
৩। অন্যের জন্য করুন, নিজে সাহস পাবেন
মানুষ যখন অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন নিজের সাহস হুঁ হুঁ করে বেড়ে যায়। অন্যের জন্য নিজের জীবনকেও বাজি ধরা যায়। অথছ যারা শুধু নিজেদের নিয়ে ভাবে, তারা হয় ভিতু প্রকৃতির। তারা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও নিজেদের নিয়ে চিন্তায় থাকেন। তাই অন্যের জন্য কিছু করুন। এতে করে আপনার মনে সাহস বৃদ্ধি পাবে।
৪। সকলের সাথে মিলেমিশে থাকুন
মানুষ একা থাকতে পারে না। চলতে ফিরতে তাকে অন্যের সাহায্য নিতেই হচ্ছে। তাই আপনি যদি সকলের সাথে মিলেমিশে চলতে পারেন, তাদের সুখে দুঃখে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারেন, তাহলে দেখবেন তারাও আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে। আপনি যতই মানুষের সাথে মিশতে পারবেন, আপনার মনের পরিধিও ততই বাড়বে।
৫।নিজেকে সেবক হিসেবে ভাবুন
পৃথিবীতে কেউই শুধু গ্রহণ করতে জন্মায়নি। পৃথিবীকেও দেবার মত আমাদের অনেক কিছু আছে। নিজেকে শুধু গ্রহিতা হিসেবে না ভেবে সেবক হিসেবে ভাবার চেষ্টা করুন। নিজের সামর্থ্যে যা কুলোবে তাই করুন। কিছু করতে হলে আপনাকে অনেক সম্পদের মালিক হতে হবে না। আপনাকে হতে হবে একজন বড় মনের মানুষ। আপনি হয়তো গরিবের পাশে এসে দাঁড়াতে পারেন, অথবা গাছ লাগাতে পারেন। যা খুশি তাই করতে পারেন। এতে করে আপনি এই পৃথিবীর জন্য অল্প হলেও কিছু করে যেতে পারবেন।
৬।সমুদ্রের কাছ থেকে জ্ঞান নিন
সমুদ্রেরতীরে দাঁড়িয়ে কখনো কি ভেবে দেখেছেন এর শেষ কোথায়? এর কোনো শেষ নেই। সমুদ্রের মত করে নিজের মনকে বড় করুন। শুধু নিজের জন্য নিজেকে উজার করে দিয়ে কখনো কোনো কৃতিত্ব অর্জন করা যায় না, সমুদ্র আমাদের এই শিক্ষাই দিয়ে থাকে। আমাদের মন যত বড় হবে তার প্রাচুর্যতাও তত বেশি হবে।
https://www.success.com/blog/6-ways-to-embrace-an-abundance-mindset