জীবনকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার জন্য আপন প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনার জীবনকে যদি সফলরুপে সাজাতে চান তাহলে নিজেই নিজেকে সুশিক্ষিত হিসেবে পরিণত করতে হবে। স্বশিক্ষিত লোক মাত্রই সুশিক্ষিত। কিন্তু কেউ কি সত্যিই নিজেকে নিজে শিক্ষিত করে তুলতে পারে? অবশ্যই! একটু বিস্তারিত বলা যাক…আপনি নিজেকে শিক্ষিত করতে পারেন? অবশ্যই আপনি করতে পারেন। এর জন্য দরকার নিজের ইচ্ছা আর গতানুগতিক চাকরীমুখী শিক্ষা থেকে নিজেকে আরও বেশী জ্ঞানী করে তোলার  প্রচেষ্টা। আসুন জেনে নেয়া যাক নিজেই নিজেকে শিক্ষিত করার কিছু টিপস।

১. কৌতূহল বাড়ান

কোন কিছু সম্পর্কে জানার পূর্বশর্ত কৌতুহল। কৌতুহল এর মাধ্যমে প্রশ্নের আবির্ভাব হয়। আর প্রশ্ন করার মাধ্যমে আপনি এমন অনেক কিছু খুঁজে পাবেন যা অনেক মানুষ হয়ত জানে না কিংবা আপনি আগে জানতেন না।

প্রশ্নের কোনো সীমা থাকা উচিত নয়। যত বেশী কৌতুহলী হবেন ততই আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়বে।

২. অজানা বিষয় পড়ুন এবং দেখুন

নিজের জানার পরিধি থেকে বের হয়ে জানার পরিধি আরও বড় করুন, দেখুন অন্য মানুষ কিভাবে চিন্তা করে। নিজের কাজের গন্ডির বাইরেও ভাবুন। সারাজীবন হয়ত কমিকস পড়েছেন, এবার উপন্যাস পড়ে আসুন। এতদিন শুধু ফিকশন দেখেছেন, এবার একটা ডকুমেন্টারি দেখুন। শুধু ক্লাসে শিক্ষকের লেকচার গুলোতেই সীমাবদ্ধ না থেকে বিখ্যাত ব্যক্তিদের লেকচার শুনুন।

 

৩. নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন

নিজেই নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন। বড় বড় কাজে হাত দিন। আগেই না পারার ভয়ে থেমে না থেকে নিজের পরিধির বাইরেও মনোযোগী হোন। যখন আপনার বর্তমান চিন্তাভাবনা বা কাজকে পরিবর্তন করার মত কিছু একটা সামনে পাবেন তখন না থেমে বরং আরও সামনে আগাতে হবে। চ্যালেঞ্জ নিয়ে সেসবের মোকাবেলা করুন।

৪. বিভিন্ন ভাষা শিখুন

বিশ্বের নানা প্রান্তের বিভিন্ন ভাষা শেখার চেষ্টা করুন। এমনকি, একই ভাষা একেক জায়গায় একেক রকম, সেগুলো পরুন। পড়ার পরিধি বাড়ানোর মাধ্যমে আপনি শুধুমাত্র ভাষা দিয়েই নিজের চিন্তা-দর্শনকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলতে পারেন। নতুন নতুন ভাষা শেখা মানে নিজেকে নতুন কোন সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করানো।

৫. প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরেও জানার চেষ্টা করুন

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অনেক সময় শুধু প্রাথমিক জিনিসপত্র পড়ানো হয়, কিন্তু বাস্তবতা আরও ব্যাপক। পাঠ্যপুস্তক গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন বিষয়ে সীমাবদ্ধ জ্ঞান দেয়, সেগুলো কাজে লাগিয়ে আরও কিছু জানার চেষ্টা করুন। হয়তোবা এগুলো পরীক্ষায় আসবে না, কিন্তু কর্মক্ষেত্রে সেসব বাড়োতি শিক্ষাই আপনাকে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যাবে। আপনি যে বাকি সবার থেকে বাড়তি কিছু জানেন, এটা তারই প্রমান দেবে।

৬. প্রতিদিন পড়ুন

স্বশিক্ষিত হতে পড়ার কোনও বিকল্প নেই। তাই পড়ার মাঝে বেশিদিন বিরতি না দিয়ে নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

বিশ্বের ইতিহাস পড়ুন। এটা আপনাকে নানান সভ্যতার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে। এটা স্বশিক্ষার অন্যতম সেরা উপায়।

আগে যারা স্বশিক্ষিত হয়েছেন তাদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন, তাঁদের থেকে অনেক অনুপ্রেরণা পাবেন। অনেক উপদেশ পাবেন, যা আপনাকে স্বশিক্ষার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ পরীক্ষার আগে মনযোগ বৃদ্ধির ১০টি কার্যকর উপায়

৭. সুশৃঙ্খল হোন

স্বশিক্ষার বৈশিষ্ট্য হলো- এখানে শেখার শেষ নেই। কথিত আছে ‘শিক্ষার কোনও বয়স নেই’। তাই শিক্ষা গ্রহনের প্রক্রিয়ায় মাঝে মাঝেই  গতি হারানোর সম্ভাবনা বেশি। এজন্য নিজেকে একটু শৃঙ্খলার মধ্যে রাখতে হবে যাতে জানার আগ্রহ চলে না যায়। অনুপ্রেরণা খুঁজে বের করতে হবে যাতে করে নিজে সবসময় স্বশিক্ষিত হতে আগ্রহী থাকেন।

৮. মত বিনিময় করুন

শিক্ষিত লোকদের সাথে কথা বলুন, তাদের মতামত জানুন। বিভিন্ন সভা, সেমিনার ও লেকচারে যোগ দিন।

স্কুল-কলেজে সময় কাটান, নানান মানুষের সাথে পরিচয় হবে, এটা আপনাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। বড়দের-জ্ঞানীদের কথা বোঝার চেষ্টা করুন, কারন জীবন সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা আপনার থেকে বেশি। তাদের মাধ্যমে নিজেকে তাদের একজনে পরিণোত করতে পারবেন।

 

 

টিপস তো জানলেন। পরিশেষে সর্বদা সাধারণ জ্ঞান, প্রতিদিন পত্রিকা টিভি সংবাদ, সাধারণ জ্ঞানের বই পড়ুন। নিজেকে স্বশিক্ষিত করতে আপনার জ্ঞান ভান্ডার বৃদ্ধি করুন। অন্য মানুষকেও জানান, তাদেরকে স্বশিক্ষিত হতে উদ্বুদ্ধ করুন। শিখুন, শিখান আর দক্ষ হোন। “অসম্ভব” শব্দটাকে দূরে সরিয়ে দিন।

https://www.wikihow.com/Become-Self-Educated