যিনি সফল হতে চান, তার প্রথম কাজটি হচ্ছে প্রতিনিয়ত নিজের উন্নতি সাধন করে চলা। এজন্য নিজেকে তৃষ্ণার্ত হতে হবে। এই তৃষ্ণা হচ্ছে নিজের উন্নতি সাধনের এবং সাফল্যের তৃষ্ণা। উন্নতি সাধনের জন্য সবসময় কাজে লেগে থাকতে হবে। কাজের পরিপূর্ণতা হচ্ছে এমন একটি লক্ষ্য, যা আপনি কখনো হয়তো নাও পেতে পারেন। কিন্তু সেই লক্ষ্য অর্জনে যদি আপনি অটুট থাকতে পারেন, তাহলেই আপনি পরিপূর্ণতার ছোঁয়া পাবেন।
উন্নতি কে না করতে চায় বলুন? প্রতিটি মানুষ চায় সে তার কাজে উন্নতি করুক। এজন্য কত শত উপদেশই না একে অন্যকে দিয়ে থাকে মানুষ। অথচ কাজের কাজটি কেউ করতেই পারে না। আমরা যদি আমাদের চারপাশের সফল ব্যক্তিদের কথা ভেবে দেখি, তাঁদের করণীয় কার্যগুলো পর্যালোচনা করে দেখি, তাহলে দেখে থাকবো যে, তাঁদের প্রত্যেকের উন্নতির পথে যে নিয়ামক গুলো কাজে দিয়েছে তা প্রায় সবই এক। তাহলে চলুন, তাঁদের উন্নতির পিছনের কি কি কারণ আমরা আমাদের জীবনে লাগাতে পারি, তা দেখে নেয়া যাক।
১। আত্মবিশ্বাস তৈরি করুন
যুগে যুগে যত সাফল্য এসে ধরা দিয়েছে সেগুলোর পেছনের প্রধান নিয়ামক হচ্ছে আত্মবিশ্বাস। এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি তার কাজের প্রতি বিশ্বাস রাখেনি। বিশ্বাস একজন ব্যক্তিকে তার সাফল্যের শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। এটি মানুষকে কাজ করতে উৎসাহ প্রদান করে থাকে। তাই আপনাকে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই তা ভাঙ্গা যাবে না।
২। অবিচলিতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যান
কখনো কখনো অনেক চেষ্টার পরও যদি সাফল্য না আসে, তখন মানুষ বিচলিত হয়ে পড়ে। আর এটিই তাকে আরও ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দেয়। সফল মানুষের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ হচ্ছে এই অবিচলিতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। কোনো অবস্থাতেই, কোনো পরিস্থিতিতেই বিচলিত হওয়া যাবে না। সাফল্য পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই অবিচলিতভাবে কাজে লেগে থাকতে হবে।
৩। চারপাশে নজর দিন এবং বোঝার চেষ্টা করুন
পৃথিবীর এক কোণে থেকে, একটি গন্ডির মধ্যে আপনার চিন্তা চেতনাকে আবধ্য রেখে আপনি ভাবছেন সাফল্য আপনার কাছে এসে ধরা দেবে, তাহলে আপনি এবং আপনার এই চিন্তা বা মানসিকতা সত্যিকার অর্থেই পুরোটা মিথ্যা। সাফল্য পেতে হলে আপনাকে আপনার চিন্তাধারাকে বিকেন্দ্রিকরণ করতে হবে। চারপাশে কি ঘটছে, কেন ঘটছে, কিভাবে ঘটছে… এসব প্রশ্ন নিজেকে করতে শিখতে হবে। আবার নিজেকেই এর উত্তরগুলো খুঁজে বের করতে হবে। এগুলো আপনাকে বিশাল এক জ্ঞানসমুদ্রে সাঁতার কাটার সুযোগ সৃষ্টি করে দিবে।
৪। ব্যর্থ হলেই ভেঙ্গে পড়বেন না
সাফল্য আর ব্যর্থতা, একটি কয়েনের এপিঠ আর ওপিঠ। সাফল্যের স্বাদ বুঝতে হলে ব্যর্থতার স্বাদ পেতে হয়। আজ পর্যন্ত আমরা যতগুলো সাফল্য এবং সফল ব্যক্তিদের গল্প শুনেছি, তাঁরা এসব সাফল্যের পূর্বে অনেক ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। আর এসব ব্যর্থতাই পরবর্তিতে তাঁদের সাফল্যের নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। তাঁরা কখনোই ব্যর্থতার জন্য ভেঙ্গে পড়েননি। বরং আরও বেশি উদ্যম নিয়ে সাফল্যের খোঁজে ঝাপিয়ে পড়েন।
৫। ধৈর্যহারা হলেন তো হেরে গেলেন
উন্নতি করতে চাইলে ধৈর্যশীল হতেই হবে। উন্নতি কখনোই হুট করে চলে আসে না। আপনি চাচ্ছেন কোনো একটি উদ্দেশ্য অর্জন করতে, কিন্তু সেটি খুব তাড়াতাড়ি অর্জন করতে চাচ্ছেন। এতে করে আপনাকে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে জানতে হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সবসময় দ্রুত সিদ্ধান্তের ফলাফল ভালো হয় না। সিদ্ধন্ত নেয়ার সময় আপনার কাজের প্রতিটি ধাপে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন, সে বিষয়ে খুব সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আর এগুলো করতে হলে আপনাকে ধৈর্য ধরে, সময় নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনার মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে। ধৈর্য ধরতে না পারলে বলাই যায়, আপনি হারতে চলেছেন। যা আপনার উন্নতিতে বিরাট বাধা।