আমরা অনেকেই আছি বই পড়তে ভীষণ রকম ভালবাসি। কারো কারো বই পরার এত তীব্র নেশা থাকে যে যেকোনো ভাল বই পেলেই তাকে আর বাস্তব জগতে খুঁজে পাওয়া যায়না। যাদের আমরা বইপোকা বলি। আবার কিছু মানুষ আছে যারা বই পড়ার নাম শুনলেই ভয় পায়। যারা খুব বই পড়েন তারা শুধু স্কুল কলেজের বই না আরও বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে সময় কাটান। আমাদের মধ্যে অনেকেই ছিলাম স্কুলে পড়ার বই এর মধ্যে গল্পের বই লুকিয়ে পড়তাম। এই বই পড়ার জন্য অনেকেই কত বকা খেয়েছেন, কত মার খেয়েছেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এই বই পড়ার উপকারিতা অসংখ্য। যারা নিয়মিত বাইরের বই পড়েন তাদের মন মানসিকতা অনেক আলাদা থাকে। বই কে বলা হয় মানুষের খুব ভাল বন্ধু। যে কখনো আপনাকে ছেড়ে যাবেনা। উপহার হিসেবেও বই থেকে ভাল কিছু খুব কম আছে। আজকে আমরা বই পড়ার বেশ কিছু উপকারিতা জানব।
১। বই মানসিক চাপ কমায়ঃ খুব মানসিক চাপে আছেন? অফিস কিংবা জীবন নিয়ে? একটি ভাল বই পড়া শুরু করুন। দেখবেন আপনার চিন্তা চাপ সব কোথাও চলে যাবে। মানসিক একটা শান্তি পাবেন। এমনকি হয়ত আপনার জীবনের কোন সমস্যার সমাধানও পেয়ে যেতে পারেন।
২। জ্ঞান বৃদ্ধি ঃ বই পড়লে জ্ঞান বাড়ে এটা আমরা সবাই জানি। যেকোনো বিষয়ের উপর জ্ঞান বাড়াতে চাইলে বই পড়তে হবে। কারন বই পড়লেই আপনি কোন বিষয়ের উপর খুঁটিনাটি সব কিছু জানতে পারবেন। যা অনেক সময় বাস্তবে দেখা যায়না।
৩। মনোযোগ বৃদ্ধি ঃ বই পড়ার খুব ভাল একটি উপকারিতা হল মনোযোগ বৃদ্ধি। যারা নিয়মিত বই পড়েন তারা সহজেই কোন কিছুতে মনযোগী হতে পারেন। কারন বই পড়ার সময় আমরা মনোযোগ দিয়ে বই এর ঘটনাকে কল্পনা করি। অন্য কাজ করার সময় আমাদের মনে অনেক চিন্তা আসে। কিন্তু বই পড়ার সময় আমরা শুধু বইটা নিয়েই ভাবতে থাকি। যেটা মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৪। শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধিঃ বই বেশি পড়া মানেই নতুন নতুন শব্দের সাথে পরিচয়। অনেক নতুন বিষয়ের সাথে এবং নতুন জিনিসের সাথে পরিচয়। কর্মজীবনে সুন্দর করে স্মার্টভাবে কথা বলা অনেক বড় একটি বিষয়। যা বই পড়ে খুব সহজেই রপ্ত করা যায়। এছাড়া ভাল লেখার জন্য ও অন্য ভাষা শিখার জন্য বই পড়া খুব ভাল একটি মাধ্যম।
৫। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিঃ আমরা যখন বই পড়ি তখন আমাদের কে বিভিন্ন ব্যাপার যেমন বইটির বিষয়, বইটির পাত্র পাত্রী, তাদের ইতিহাস এবং চরিত্র ইত্যাদি মনে রাখতে হয়। এর ফলে আমাদের মস্তিষ্ক খুব ভাল কাজ করে তখন। এছাড়া বই পড়ার সময় আমরা বইটি নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ পাই। যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৬। বিনোদনঃ শখ অথবা বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে বই পড়ার অভ্যাস অনেক মানুষের থাকে। একটি ভাল বই এর নাম শুনলেই কিংবা হাতে নিলেই অনেকের মন ভাল হয়ে যায়। মন ভাল করতে, অলস সময় কাটাতে বই পড়া খুব ভাল একটি মাধ্যম। কারন এতে কোন ক্ষতি নেই। একে তো অনেক জ্ঞান পাওয়া যায়। আবার মনের আনন্দ বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে বই পড়া খুব সহজ হয়ে গেছে ইন্টারনেট এর জন্য। এখন বই কম্পিউটার বা মোবাইল এর স্ক্রিন এও পড়া যায়। অনেক বই বিনামূল্যে পাওয়া যায় এখানে।
৭। কল্পনাশক্তি বৃদ্ধিঃ আমরা সাধারনত যা দেখি তাই আমাদের কল্পনায় থাকে। বই পড়লে অনেক নতুন নতুন বিষয়, স্থান নিয়ে জানা যায়। আর সেগুলো কল্পনা করি আমরা। এভাবে আমাদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পায় বই পড়ার ফলে।
৮। মন মানসিকতার উন্নতি ঃ কথায় আছে বই মানুষের মনকে আলোকিত করে। বই আসলেও মানুষের মন মানসিকতা চিন্তা চেতনা বদলে দেয়। আমাদের মানবিকতা, মনুষ্যত্ব বিষয়গুলো একটি বই খুব সুন্দরভাবে সাজিয়ে দিতে পারে। অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসে। আপনার মনকে বড় করে তুলে এই বই। ভুল এবং সঠিক এই বিষয়গুলোকে খুব ভালভাবে আমাদের সামনে তুলে ধরে এই বই।
আসলে বই পড়ার উপকারিতা বলে শেষ করা যায়না। কারন এর শেষ নেই। সবার উচিত বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার। ছোট থেকেই বাচ্চাদেরকেও সুন্দর সুন্দর বই পড়তে দিতে হবে। আর আমরা তো জানি বই আপনাকে কখনো ছেড়ে যাবেনা।
তথ্যসূত্রঃ https://minipoliglotini.com/en/blog/posts/10-advantages-of-reading
http://capcana.com/news/10-benefits-of-reading-why-you-should-read-every-day/